Kd's e-pathsala Psychology of Adjustment সিজোফ্রেনিয়া : লক্ষণ, কারণ, প্রকারভেদ এবং চিকিৎসা

সিজোফ্রেনিয়া : লক্ষণ, কারণ, প্রকারভেদ এবং চিকিৎসা



স্কিজোফ্রিনিয়া একটি মানসিক ব্যাধি। একে প্রায়শই সিজোফ্রেনিয়া নামে উচ্চারণ করা হয়। ১৯৪৪ সালে আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন (APA) কর্তৃক মানসিক বৈকল্যের শ্রেণীকরণ Diagnostic and Statistical Manual of Mental Disorders-এর পঞ্চম সংস্করণের (DSM-5) Section-II এর অন্তর্গত হল এই প্রকার মানসিক ব্যাধি। জার্মান চিকিৎসক এমিল ক্রেপলিন (Emil Kraepelin) ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে মনোরোগের শ্রেণিকরণ করতে গিয়ে প্রথম এই শব্দটি ব্যবহার করেন। পরে ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে সুইজারল্যান্ডের মনোচিকিৎসক ইউজিন ব্লিউলার (Eugen Bleuler) বিভক্ত ব্যক্তিসত্তা কথাটি বোঝাতে গিয়ে “সিজোফ্রেনিয়া” শব্দটি ব্যবহার করেন। এটি হল একপ্রকার জটিল এবং দীর্ঘস্থায়ী মানসিক ব্যাধি। এই রোগে আক্রান্ত রোগীর চিন্তাধারা এবং অনুভূতির প্রকাশের মধ্যে কোনো প্রকার সঙ্গতি থাকে না ৷ রোগী বাস্তবতার বোধ বা উপলব্ধি হারিয়ে ফেলে, প্রায়ই অলীক প্রত্যক্ষণ, ভ্রান্তবিশ্বাস ইত্যাদিতে ভোগে। 

স্কিটসোফ্রিনিয়া শব্দটির উৎপত্তি গ্রীক শব্দমূল skhizein (σχίζειν, “to split” বা “দুভাগ করা”) এবং phrēn, phren- (φρήν, φρεν-; “mind” বা “মন”) থেকে। এমন নামকরণ সত্ত্বেও সিজোফ্রেনিয়া বলতে আদপে “দ্বিখন্ডিত মন” বুঝায় না; যদিও অনেক সময় সাধারণ মানুষ এটিকে ডিসোসিয়েটিভ আইডেনটিটি ডিজর্ডার (যা মাল্টি পারসনালিটি ডিজর্ডার বা স্প্লিট পারসোনালিটি নামেও পরিচিত) এর সাথে গুলিয়ে ফেলে; প্রকৃতপক্ষে এদুটি ভিন্ন ভিন্ন ব্যাধি। বংশগতি, শৈশবের পরিবেশ, নিউরোবায়োলজি এবং মানসিক ও সামাজিক প্রক্রিয়াসমূহ এ রোগের গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসাবে প্রতিভাত হয়। সারাবিশ্বের ০.৩–০.৭% মানুষ এ রোগে আক্রান্ত ২০১৩ সালে আনুমানিক ২৩.৬ মিলিয়ন চিকিৎসাপ্রার্থী ছিল [Source: Wikipedia]। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার পর্যবেক্ষণ ও অতীত কর্মকাণ্ড পর্যালোচনার মাধ্যমে এই রোগ নির্ণয় করা হয়। এক্ষেত্রে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা, যেমন – দীর্ঘ সময় ধরে বেকারত্ব, দারিদ্র, আবাসনহীনতাকে প্রধান কারণ বলে গণ্য করা হয়। যদিও এখনো পর্যন্ত এ রোগের কোনো একক জৈব কারণ শনাক্ত করা যায়নি। এই রোগের সম্ভাব্য বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ সমষ্টি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে যে, আদৌ এটি একটি একক ব্যাধি না একাধিক পৃথক উপসর্গের সহাবস্থান।
সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ :

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ গুলি হল অলীক প্রত্যক্ষণ, ভুল ধারণা, অবাস্তব চিন্তাভাবনা, অকারণ সন্দেহ, বিভ্রান্তি, বিড়ম্বনা ইত্যাদি। সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত সব রোগীর লক্ষণ এক হয় না। লক্ষণগুলি রোগীর ওপর নির্ভর করে। কোনও কোনও রোগীর ক্ষেত্রে এই রোগের লক্ষণগুলি কয়েক মাস বা বছর ধরে ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করতে পারে বা হঠাৎ করে দেখা দিতে পারে। এই রোগের কিছু লক্ষণ হল- 

 

  1. আবেগে স্খলিত ভাব;
  2. নিজেকে গুটিপোকার মত লুকিয়ে রাখা;
  3. রোগী এমন কিছু শুনতে পায় বা দেখতে পায় যেটা বাস্তবে থাকে না;
  4. কথা বলা বা লেখায় অদ্ভুত বা অযৌক্তিক ধরন, আচরণ;
  5. গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতিতে উদাসীন বোধ করা;
  6. জটপাকানো কল্পনাশ্রয়ী মনন;
  7. পড়াশুনায় বা বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে অদ্ভুত পরিবর্তন;
  8. ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি এবং চেহারায় পরিবর্তন;
  9. অযৌক্তিক, রাগ বা প্রিয়জনদের প্রতি ভয়ঙ্কর প্রতিক্রিয়া;
  10. ঘুমে ব্যাঘাত ঘটা;
  11. অনুপযুক্ত বা অদ্ভুত আচরণ।

 

এই রোগীরা সকলেই প্রায় বাস্তবজগত থেকে বিচ্ছিন্ন। কারও কারও কথাবার্তায় প্রথম থেকেই স্বাভাবিকতা ও বাস্তববিমুখীনতার পরিচয় পাওয়া যায়। অলীক প্রত্যক্ষণ ও ভ্রান্তবিশ্বাস যাদের থাকে তাদের সাধারণ মানুষই অস্বাভাবিক এবং কোনও কোনও ক্ষেত্রে উন্মাদ বলে বুঝতে পারে। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে দেখা যায়, রোগীর অসাধারণ জ্ঞান বাড়ির লোকেদের বিস্মিত করে, তাঁরা রোগীকে নিয়ে গর্বিত রোধ করেন। সিজোফ্রেনিয়ার পজিটিভ উপসর্গগুলি হল- 

  • ভ্রান্তবিশ্বাস : এতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাধারণত উদ্ভট কিংবা ভুল ধারণা বা বিশ্বাস বহন করে থাকে, যার সাথে বাস্তবের কোনও মিল থাকে না। যেমন- কেউ তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। এসব উদ্ভট ধারণার আকর্ষণ এতটাই হয় যে, তারা আর কোন দিকে চিন্তা করার সুযোগ বা অবকাশ পায় না।
  • অলীক প্রত্যক্ষণ : এই প্রকার রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি কোন উদ্দীপক ছাড়াই সবকিছু দেখতে বা শুনতে পায়। তারা এমন কিছু দেখে, অনুভব করে, স্বাদ গ্রহণ, শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়া যার আসলেই বাস্তবে কোনও অস্তিত্ব নেই। এতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা অবাস্তব জিনিস অনুভব করে অর্থাৎ এসবের কোন বাস্তব ভিত্তি থাকে না।
  • বিশৃঙ্খল চিন্তাভাবনা এবং কথাবার্তা : এক্ষেত্রের প্রধানতম লক্ষণ হল অপ্রাসঙ্গিক চিন্তা। এক্ষেত্রে রোগী খুব আকস্মিকভাবে একটি বিষয় থেকে অন্য বিষয়ে যায়। রোগীরা বারবার কোনও কথা, শব্দ বা ছড়া পুনরাবৃত্তি করতে পারে কিংবা হটাৎ হটাৎ তাদের মাথায় নতুন নতুন চিন্তা ভাবনার উদয় হয়।
  • বিশৃঙ্খল আচরণ : এক্ষেত্রে রোগীর মধ্যে স্বাস্থ্যকর আচরণে সমস্যা হয়। তারা বিভিন্ন ধরণের সঙ্গতিহীন আচরণ করে থাকে, যার কোন মানে হয় না। খুব দ্রুত চিন্তাধারা বদলানো, ভুলে যাওয়া, কোনও সিদ্ধান্ত নিতে না পারা, বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির পুনরাবৃত্তি, শব্দ বা অনুভূতি ঠিক মতো বুঝতে না পারা ইত্যাদি এই রোগের লক্ষণ।


সিজোফ্রেনিয়ার প্রকারভেদ

সিজোফ্রেনিয়ার প্রকারভেদ একাধিকবার পরিবর্তিত হয়েছে, সর্বশেষ Diagnostic and Statistical Manual of Mental Disorders-এর পঞ্চম সংস্করণের (DSM-5) সিজোফ্রেনিয়ার শ্রেণিবিভাগগুলিকে বাদ দেওয়া হয়। DSM-এর পূর্ব সংস্করণে DSM-IV-এ সিজোফ্রেনিয়াকে নিম্নলিখিত পাঁচ ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। যথা- 1) paranoid type, 2) disorganized type, 3) catatonic type, 4) undifferentiated type, 5) residual type. 

 

কিন্তু, নিম্নে আমরা সুইজারল্যান্ডের মনোচিকিৎসক ইউজিন ব্লিউলার (Eugen Bleuler)-এর দেওয়া সিজোফ্রেনিয়ার শ্রেণিকরণ আলোচনা করবো। ব্লিউলার সিজোফ্রেনিয়াকে চারটি শ্রেণীতে বিভক্ত করেছেন, যথা – 

 

  1. সিম্পল সিজোফ্রেনিয়া (Simple Schizophrenia)
  2. হেবিফ্রেনিক সিজোফ্রেনিয়া (Hebephrenic Schizophrenia
  3. ক্যাটাটনিক সিজোফ্রেনিয়া (Catatonic Schizophrenia)
  4. প্যারানয়েড সিজোফ্রেনিয়া (Paranoid Schizophrenia)

 

  1. সিম্পল সিজোফ্রেনিয়া : এক্ষেত্রে সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ গুলি হালকা হয় এবং উগ্রতা প্রদর্শন করে না। কিন্তু তাও এই রোগে রোগীর ব্যক্তিত্ব ভেঙ্গে পড়ে, সে আকাশ কুসুম চিন্তা করতে শুরু করে। নিজ পরিবার ও বন্ধুবান্ধব থেকে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। নিজ জামাকাপড়, খাদ্য গ্রহণ ইত্যাদি অনীহা প্রকাশ করে কিংবা ভুলে যায়। এছাড়া দুর্বল স্বাস্থ্যবিধি এবং অন্যান্য ছোটখাটো শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়।
  2. হেবিফ্রেনিক সিজোফ্রেনিয়া : এর মূল বৈশিষ্ট্য হল, এতে আক্রান্ত রোগীরা অগোছালো চিন্তাভাবনা এবং বিশৃঙ্খল আচরণ করে। এক্ষেত্রে রোগীর সাধারণত অসংলগ্ন এবং অযৌক্তিক চিন্তাভাবনা থাকে। এটি দৈনিক ক্রিয়াকলাপ যেমন রান্না করা, খাওয়া, নিজের স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া ইত্যাদিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তবে এই প্রকার সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রথম দিকে জ্বর, মাথা ধরা ইত্যাদি উপসর্গের কথা বলে। 
  3. ক্যাটাটনিক সিজোফ্রেনিয়া : এই ধরণের রোগীর প্রধান লক্ষণ হল ‘স্তম্ভ ভাব’ (stupor), তারা যেন একেবারে অনড়। শরীর রবারের মত হয়ে যায়, এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা দিনের পর দিন অনড় থাকতে পারে। এছাড়া, এই ধরনের সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত রোগী শারীরিকভাবে অদ্ভুত আচরণ করতে পারে, হঠাৎ করে উত্তেজিত হয়ে পড়তে পারে। এক্ষেত্রে রোগীর পেশি চালনার ভঙ্গি অস্বাভাবিক হ​য়, যেমন- হাঁটতে গিয়ে হঠাৎ থেমে যাওয়া, নিশ্চুপ হয়ে অদ্ভুত ভাবে বসে থাকা,অকারণে মারামারি, অন্যরা যা বলছে তা বারবার বলা, ইত্যাদি। 
  4. প্যারানয়েড সিজোফ্রেনিয়া : এক্ষেত্রে, কোনও ব্যক্তির নির্দিষ্ট কিছু ভ্রান্ত বিশ্বাস বা ধারণা, বিভ্রান্তি থাকতে পারে, অলীক প্রত্যক্ষণ হয়, যার সাথে বাস্তবতার কোনও সম্পর্ক নেই। যেমন- এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি বিশ্বাস করতে পারে যে, কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর লোকেরা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, কেউ তাকে বিরক্ত করছে। সিজোফ্রেনিয়ার প্রত্যেক শ্রেণিবিভাগে অলীক প্রত্যক্ষণ ও ভ্রান্তবিশ্বাস পরিলক্ষিত হয়, তবে এই শ্রেণির ক্ষেত্রে অলীক প্রত্যক্ষণ ও ভ্রান্তবিশ্বাসের প্রভাব একটু বেশি।



সিজোফ্রেনিয়ার কারণ

এই রোগের সঠিক কারণ কি তা আজও জানা যায়নি। তবে, যে যে কারণগুলিকে এই রোগের জন্য দায়ী করা হয়, সেগুলি হল- 

  1. জিনেটিক (Genetic) : যদি কারও মা-বা বা তাদের উভয়েরই সিজোফ্রেনিয়া হয় তবে তাদের শিশুদেরও এটি হওয়ার ১০% সম্ভাবনা রয়েছে।
  2. জৈব রাসায়নিক উপাদান (Biochemical Factors) : মস্তিষ্কে উপস্থিত কিছু জৈব রাসায়নিক পদার্থ বিশেষত ডোপামাইন (মস্তিষ্ক থেকে রাসায়নিক বহনকারী সংকেত) নামক নিউরোট্রান্সমিটারের ভারসাম্যহীনতা সিজোফ্রেনিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এই রাসায়নিক ভারসাম্যহীনতা জেনেটিক, জন্মগত ত্রুটি বা গর্ভাবস্থায় কিছু ধরনের জটিলতার কারণেও হতে পারে।
  3. স্ট্রেস (Stress) : সিজোফ্রেনিয়ার কারণ হিসাবে স্ট্রেস জড়িত বলে বিশ্বাস করা হয়। সিজোফ্রেনিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রায়শই যে কোনও জায়গায় মনোনিবেশ করতে সমস্যা হয়, যার ফলে তারা উদ্বেগযুক্ত এবং বিরক্তিকর হন। এগুলো ছাড়াও, এই পরিস্থিতিতে পরিবার এবং নিজের প্রতি মনোযোগের অভাব ও চাপ তৈরি করে। এখানে বলা কঠিন যে সিজোফ্রেনিয়া স্ট্রেসের কারণে ঘটছে।
  4. ভাইরাস সংক্রমণ, মানসিকভাবে অত্যন্ত চাপগ্রস্থ পরিস্থিতি, কিংবা দীর্ঘকালীন অসুস্থতা ইত্যাদির কারণে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 
  5. জন্মকালীন কোনও জটিলতা থাকলেও এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। 
  6. গর্ভাবস্থায় কোনও মা যদি ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয় তখন এই রোগ হতে পারে। 
  7. কিছু উত্তেজক মাদকদ্রব্য এবং ওষুধ সেবন এই রোগের কারণ হতে পারে। 



এই রোগের চিকিৎসা

গবেষণায় দেখা গেছে, সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্তদের মধ্যে শতকরা ২৫ ভাগ চিকিৎসার পর সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়, ৫০ ভাগ ওষুধ ব্যবহারের মাধ্যমে সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে। বাকি ২৫ ভাগ কখনোই ভালো হয় না। এই রোগের লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এই চিকিৎসার প্রধান মাধ্যম হল অ্যান্টিসাইকোটিক ঔষুধ। এটি বিভিন্ন উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি, বিভিন্ন থেরাপি ও মনোচিকিৎসাও গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন মানসিক চিকিৎসা দ্বারা এর বিভিন্ন উপসর্গকে ভালো করা যায় এবং রোগীর সামাজিক সহায়তাও প্রয়োজন হয়। এছাড়া, রোগীকে অ্যানেস্থেসিয়া দিয়ে তার মাথায় ইলেকট্রোড লাগানো হয় এবং ছোটো কারেন্টের শক (Electroconvulsive Therapy or ECT) দেওয়া হয়। এতেও রোগীর মানসিক অবস্থা এবং চিন্তার উন্নতি হয়।

 

মনোবিজ্ঞানী তুষার বলেন, যেসব পরিবার তীব্র আবেগ প্রকাশ করে, তাদের সদস্যদের মধ্যে সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্তের হার বেশি। রোগীকে মানসিক চাপ না দেওয়া, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য না করা ও চিন্তামুক্ত রাখা খুব জরুরি। যদি তিনি ওষুধ সেবনের মধ্যে থাকেন তবে ঠিকমতো ওষুধ খাচ্ছেন কি না, চিকিৎসা নিচ্ছেন কি না খেয়াল রাখতে হবে। সামাজিকভাবে রোগীর ক্ষেত্রে সহেযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। তাকে পাগল বিবেচনা করা ঠিক নয়। এটি কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। [Source:https://www.ntvbd.com/health/]

 

পরামর্শ :

আপনার বাড়িতে যদি কেউ এই রোগে আক্রান্ত হয়, তবে সেক্ষেত্রে আপনি কি কি করবেন-

 

  1. মনে রাখবেন, এটি একটি রোগ (Medical Illness)। আপনার পরিবারে তেমন কেউ থাকলে এর জন্য লজ্জিত বোধ করার কারণ নেই।
  2. এই রোগের জন্য নিজেকে অপরাধী ভাববেন না। এটি কারও ভুলের ফল নয়। এটিকে মেনে নিন।
  3. আপনার রোগীর লক্ষণসমূহ কী তা জেনে নিন। রোগ পুনরায় আক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণ হলো আগে ধরতে পারলে পুনরায় আক্রমণ ঠেকাতে পারবেন। যেমন, ঘুমের ধরনে পরিবর্তন বা সামাজিকভাবে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া।
  4. রোগীর জন্য একটি দৈনন্দিন রুটিন তৈরি করে তা মেনে চলতে সহায়তা করুন।
  5. রোগী যাতে নিয়মিত ওষুধ সেবন করে, সে ব্যাপারে খেয়াল রাখুন।
  6. রোগীকে বুঝতে দিন তিনি একাই এই রোগ মোকাবিলা করছেন না, আপনারাও তাঁর সঙ্গে রয়েছেন। যোগাযোগের রাস্তা উন্মুক্ত রাখুন।
  7. প্রকাশ্যে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা প্রকাশ করবেন না। আবার সরাসরি ও নির্দয় সমালোচনাও করবেন না। নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারলে প্রশংসা করুন।
  8. মনে রাখবেন, এঁদের যত্ন নেওয়া আবেগগতভাবে ও শারীরিকভাবে ক্লান্তিকর। নিজের জন্য সময় নিন। [Source : https://www.prothomalo.com/opinion/column]
 
_________________________________________

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *