Kd's e-pathsala Educational Sociology,Technology in Education ইন্টারনেট-এর ধারণা ও সুবিধা (Concept and Advantages of Internet)

ইন্টারনেট-এর ধারণা ও সুবিধা (Concept and Advantages of Internet)



ইন্টারনেট একটি ইলেকট্রনিক যোগাযোগ যন্ত্র। এটি একটি অন্যতম বড় নেটওয়ার্ক যা বিশ্বব্যাপী মিলিয়ন ও ট্রিলিয়ন কম্পিউটারকে সংযুক্ত করে রেখেছে। মোডেম, কেবল, টেলিফোন লাইন ও স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এই ব্যবস্থা সচল থাকে। এই ব্যবস্থা প্রথম শুরু হয় পেন্টাগনে প্রতিরক্ষা বিভাগে। এই নেটওয়ার্ক ARPANET নামে পরিচিত ছিল। 1969 সালের সেপ্টেম্বর মাসে এটি কার্যকরী হয়। এটি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে বিজ্ঞান ভিত্তিক ও তত্ত্বমূলক গবেষণার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হত।

  

শুধুমাত্র আঙ্গুলের স্পর্শে ইন্টারনেট প্রচুর যোগাযোগের সুবিধা প্রদান করেছে। বার্তা পাঠাবার সুযোগ, নতুন বন্ধু করার সুযোগ, ব্যাঙ্ক বিনিয়োগ, বিভিন্ন কোর্সে ভর্তির সুযোগ, এয়ার বুকিং, রেলওয়ে বুকিং এর সুযোগ এছাড়া বিশ্বের নানান দিকের অনুসন্ধান আজ ঘড়ে বসে ইন্টারনেট-এর সাহায্যে গ্রহণ করা হচ্ছে। এটি যেন একটি বিশ্বকোষ। আধুনিক যুগে ইন্টারনেট না থাকলে আমরা সভ্যজগতে প্রায় অসহায়।

 

 

প্রয়োজনীয় উপকরণ

  • কম্পিউটার : যে কোন কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ করা যায়।
  • প্রোগ্রামস্ : এখানে বিশেষ প্রোগ্রাম ব্যবহৃত হয়। এগুলির বেশিরভাগ বিনামূল্যে পরিবেশিত হয়।
  • মোডেম : কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের মধ্যে তথ্য বিনিময় করে মোডেম পরিষেবা।
  • টেলিফোন লাইন : ইন্টারনেটের সমস্ত তথ্য টেলিফোন লাইন দ্বারা চালিত হয়।
  • স্পীকার্স : মিউজিক, ভয়েস ও কম্পিউটার বাহিত অন্যান্য খবর আমরা শুনি স্পীকার্স দ্বারা।
  • ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার : এটি ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদান করে থাকে, নির্দিষ্ট অঞ্চলভেদে। 

 

তথ্য সম্প্রসারণের জন্য কম্পিউটার, ইন্টারনেট ব্যবহৃত হয়। সারা বিশ্বের সার্ভার ও ক্লায়েন্ট ডেটা ব্যবহার হয়। ইন্টারনেট হল প্যাকেট ওরিয়েন্টেড নেটওয়ার্ক অর্থাৎ যে ডেটা প্রেরিত হয়, তা প্যাকেটের মধ্যে বিভক্ত হয়ে যায়। ইন্টারনেটের বিভিন্ন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যখন ডেটা পাঠানো হয়, তখন নেটওয়ার্কগুলি একটি সোশাল কম্পিউটার দ্বারা যুক্ত হয় যা রাউটার নামে পরিচিত। রাউটার ডেটাগুলি কোথায় যাচ্ছে, তা পরীক্ষা করে এবং কোন দিকে পাঠাবে, তা ঠিক করে। রাউটার যদি জানে যে ডেটা কোথায় যাচ্ছে, তবে সেখানে নিশ্চয়ই কোন ঠিকানা (address) আছে যা Internet Protocol (IP) নামে পরিচিত। প্যাকেটের মধ্যে বিভক্ত হয়ে ডাটা IP র মাধ্যমে সঞ্চালিত হয়। এটি অন্য প্রোটোকল দ্বারা পরিচালিত হয়- তাহল TCP or Transmission Control Protocol.

 

 

ইন্টারনেটের সুবিধা

  1. ইলেক্ট্রনিক মেল : বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে থাকা মানুষের সঙ্গে বার্তা দ্বারা যোগাযোগ করা যায় এর সাহায্যে। বন্ধু-বান্ধব, পরিবারের সদস্য, সহকর্মী প্রমুখ বিভিন্ন ব্যাক্তির সঙ্গে যোগাযোগ ঘটিয়ে দেয় ই-মেল।
  2. ইনফর্মেশন : ইন্টেরনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা যায়। খবরের কাগজ, ডিকশনারি, পরীক্ষার ফলাফল, প্রাপ্ত চাকুরীর তালিকা, ভ্রমন বৃত্তান্ত, রন্ধন প্রনালী ইত্যাদি জানা যায় ইন্টারনেটের সহায়তায়।
  3. এন্টারটেনমেন্ট : চিত্তবিনোদনের নানা দিক ইন্টারনেটের মাধ্যমে পাওয়া যায়। রেডিও, টিভির সম্প্রসারণ যেমন হয়, তেমনি ভিডিও নানা ধরনের মিউজিক উপভোগ করা যায়। কোন সাম্প্রতিক সিনেমার ট্রেলার দেখা যায়, বিখ্যাত ব্যাক্তির ইন্টারভিউ দেখা যায়।
  4. প্রোগ্রাম : ইন্টারনেটের মাধ্যমে একজন লক্ষাধিক প্রোগ্রাম খুঁজে পান।
  5. অনলাইন শপিং : ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন দ্রব্য ক্রয় ও বিক্রয় করা যায়।
  6. চ্যাটিং : এক ব্যাক্তি অপর ব্যাক্তির সঙ্গে টাইপ করে মেসেজ পাঠিয়ে পরস্পরের সঙ্গে চ্যাট করতে পারেন। 

 

ইন্টারনেটের অসুবিধা

  1. এই পরিষেবা ভারতবর্ষের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আজও পৌছাতে পারেনি।
  2. এই পরিষেবা অত্যন্ত ব্যয় বহুল।
  3. এর ব্যবহার সবাই সমানভাবে করতে পারে না, এক্ষেত্রে বিশেষ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়।
  4. প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে এই পরিষেবা সব সময় উপলব্ধ থাকে না।
  5. বর্তমানকালে এই পরিষেবা ব্যবহারের মাধ্যমে বহু অসৎ ব্যাক্তি নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করে থাকে।
  6. এই পরিষেবার মাধ্যমে ব্যক্তিজনের কাছে নানান প্রকার নেতিবাচক বার্তা প্রেরিতও হয়ে থাকে।
  7. বর্তমানকালে নানান সামাজিক কার্যকলাপে এই পরিষেবা মদত জুগিয়ে থাকে।

উপরিউক্ত নানান অসুবিধা থাকা সত্তেয়, এই পরিষেবা বর্তমানযুগে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। বর্তমানযুগ এই পরিষেবা ছাড়া অচল। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিচার ও আইন বিভাগ এই পরিষেবার সাহায্যে খুবই দ্রুততার সাহায্যে মানবের মধ্যে নিজ বিভিন্ন পরিষেবা ছড়িয়ে দিচ্ছে।

_____________________________________